স্ত্রীকে কি ভ্রমণসঙ্গী করা যাবে?

স্বামী-স্ত্রীর মিল-মহব্বত ও আন্তরিকতায় গড়ে ওঠে সুখী পরিবার। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এমন অনেক সুন্নত আছে, যেগুলো অনুসরণ ও অনুকরণেই গড়ে ওঠে স্বামী-স্ত্রীর সুখী দাম্পত্য জীবন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাম্পত্য জীবনই এর জ্বলন্ত প্রমাণ।

দূরে কোথাও সফরে গেলে স্ত্রীকে সাথে নিয়ে যাওয়া মহানবী সা:-এর সুন্নত। বিভিন্ন সফরে তিনি স্ত্রীদের কেউ একজনকে সাথে নিতেন। হজ-ওমরাসহ বিভিন্ন যুদ্ধেও স্ত্রীদের সাথে নিয়ে গেছেন বলে একাধিক হাদিস থেকে জানা যায়।

ষষ্ঠ হিজরিতে রাসুলুল্লাহ সা: যখন বনি মুস্তালিক মতান্তরে মুরাইসি যুদ্ধে যান, তখন স্ত্রীদের মধ্য থেকে হজরত আয়েশা রা:-কে সাথে নিয়ে যান। এই যুদ্ধের আগে পর্দার বিধান নাজিল হয়েছিল। হজরত আয়েশাকে উটের পিঠে পালকির ওপর বসিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই যুদ্ধে হজরত আয়েশাকে বড় অপবাদও দেয়া হয়েছিল, যার প্রতিবাদে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে আয়াতও নাজিল করেছেন। (বুখারি)

এছাড়া অন্যান্য সফরে অন্য স্ত্রীদের সাথে নেয়ার কথাও হাদিসে এসেছে। হুদাইবিয়ার সন্ধির সফরে নবীপত্নী উম্মে সালামা রা: তাঁর সাথে ছিলেন। কোরাইশদের কাছে এই সন্ধি করতে রাজি ছিলেন না অনেক সাহাবি। এই চুক্তির কারণে তাই সাহাবিরা বিমর্ষ ছিলেন।হজরত উম্মে সালামা রা:-এর পরামর্শেই তাঁদের শান্ত করেছিলেন মহানবী সা:। (বুখারি)

ভ্রমণে মহানবী সা:-এর সাথে স্ত্রীদের কে যাবেন—তা নিজের ইচ্ছেমতো ঠিক করতেন না। বরং তিনি তাঁদের মধ্যে লটারির আয়োজন করতেন। লটারিতে যাঁর নাম আসত, তিনিই হতেন মহানবী সা:-এর সফরসঙ্গী। আয়েশা রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সা: সফরের ইচ্ছে করলে স্ত্রীদের মধ্যে লটারির ব্যবস্থা করতেন। যাঁর নাম আসত, তাঁকে নিয়েই সফরে বের হতেন তিনি। এছাড়া (রাতযাপনের ক্ষেত্রেও) প্রত্যেক স্ত্রীর জন্য এক দিন এক রাত নির্দিষ্ট করে দিতেন। …’ (বুখারি)