একই নম্বর পেয়ে ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেলেন ‍জমজ বোন

আমরা জমজ বলতে যা বুধি তা হলো দু’ জন সহদোর একই মায়ের পেটে প্রায় একই সময়ে জন্মগ্রহণ করবে। সেই সাথে তাদের চেহারাতেও থাকবে হুবুহু মিল। কিন্তু লেখাপড়া, মেধা, শখ, স্বপ্ন সবকিছুতেই মিলে যাবে-এমনটা সচরাচর দেখা যায় না।

তবে এমনটাই ঘটছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার দুই জমজ বোন অতুন হক অর্থী ও অবনী হক অর্পার জীবনে। তাদের মধ্যে শুধু চেহারা নয়, জীবনের একটি ঘটনার সঙ্গে হুবহু মিলেই চলেছে আরেকটি ঘটনা। যমজ বলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের জন্ম তারিখ এক। সেখানে বিস্ময়ের কিছু নেই। তবে স্কুলজীবন থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পর্যন্ত দুই বোন যে নজির রেখে চলেছেন, তাতে বিস্মিত না হয়ে উপায়ও নেই।

উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চকবরু গ্রামের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক এস এম আমিনুল হক স্বপন ও পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা মোছা: লাভলী খাতুন দম্পত্তির সন্তান তারা।

১৯ বছর বয়সী এ জমজ দু’বোন সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় দু’জন দুই ভবন থেকে পরীক্ষা দিলেও একই নম্বর (৫৩) পেয়েছে। ফলে দু’জনের মেধা স্কোর হয়েছে ৭২.৮৮ আর মেধাক্রম ১৬৩৬ ও ১৬৩৭। এমন বিষ্ময়কর মিল ও সাফল্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

এর আগে ২০১২ সালে দবিরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি পরীক্ষা দিয়ে দু’জনেই জিপিএ-৫ অর্জন করে। জেএসসিতে দক্ষিণ পুস্তিগাছা বনানী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অংশ নিয়ে দু’জনেই জিপিএ-৫ লাভ করে। এসএসসিতে ২০১৮ সালে সিরাজগঞ্জ সবুজ কানন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে দু’ জনেই জিপিএ-৪.৯৪ পাওয়ার পাশাপাশি সবগুলো বিষয়ে একই নম্বরও পায়।

পরে ২০২০ সালে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এবারও দু’ জনেই গোল্ডেন জিপিএ-৫ অর্জন করে এবং দু’জনেই সাধারণ বৃত্তিলাভ করেন।

অর্পা ও অর্থির বাবা দক্ষিণ পুস্তিগাছা বনানী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম আমিনুল হক স্বপন জানান, আমার এই দুই মেয়ে ছাড়া আর কোনো সন্তান নেই। তাদের আমি মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করছি। ওরা সবক্ষেত্রেই কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছে, এটাই আমার কাছে বড় পাওয়া।