নবান্ন উৎসবে মেতেছে রাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

আজ বাংলা ১৪৩০ সালের পহেলা অগ্রহায়ণ। এ দিনে বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে নবান্ন উৎসব পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা, পিঠা খাওয়া, নাচ-গান-আনন্দ-উল্লাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘নবান্ন উৎসব-২০২৩’।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় কৃষি অনুষদের সামনে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম। দিনটি উদযাপন উপলক্ষ্যে অনুষদের সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এছাড়া পিঠা উৎসব, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কারের আয়োজন করা হয়েছে।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য বলেন, বাঙালির ইতিহাস ও গ্রামীণ ঐতিহ্যের সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য আমাদের কৃষি অনুষদ কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের এ নবান্ন উৎসব। আমাদের দায়িত্ব হলো ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা। যদি আমরা তাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা আমাদেরর সন্তানসহ পরবর্তী প্রজন্মকে বঞ্চিত করব আমাদের গ্রাম-বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে।

আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ওবায়দুর রহমান প্রামানিক, প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক, এগ্রোনোমী অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, কৃষি অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক মো. আব্দুল আলিম, বিভাগের শিক্ষকসহ দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী।

এবারের নবান্ন উৎসবে নিজেদের হাতের তৈরি ১২টি পিঠার স্টল নিয়ে বসেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সেখানে দুধপুলি, চন্দ্র পুলি, নারকেল পুলি, খোলা চিতই, তেল পিঠা, নকশী পিঠা, মালাই বিহার, সুজির বড়া, জামাই পিঠা, পাটি সাপটা, গোলাপ ফুল, ডাবের পিঠা, লবঙ্গ পিঠা, শামুক পিঠা, রূপালি পিঠা, বুটের বরফি, মোহন ভোগ, ডিম সুন্দরী, মাছের পিঠা, গাজরের হালুয়া ডিমপুরি, গোলাপ, আরশি নগর, ঝাল-মিষ্টি, হৃদয়হরণ পিঠা, সূর্যমুখী, পাকোয়ান পিঠা, শামুক পিঠা, লবঙ্গ লতিকা, রসে ভরা সবজি পিঠা, রস মলাই খিরপুলিসহ প্রায় দেড় শতাধিক পদের পিঠা শোভা পাচ্ছে।

বাহারি নামের এসব পিঠা খেতে শিক্ষার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ১০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পিঠা।এগ্রোনোমী অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা কৃষির ছাত্র। গ্রাম বাংলা নিয়েই আমাদের পড়াশোনা। নবান্ন উৎসবের মাধ্যমে আমরা সবাইকে জানান দিতে চাই যে, আমাদের গ্রাম বাংলার একটি ঐতিহ্য রয়েছে।

সে ধারাবাহিকতায় আজকে এ নবান্ন উৎসবের আয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে আমাদের শিক্ষার্থীদের হাতে তৈরি প্রায় দেড় শতাধিক পিঠা নিয়ে ‘পিঠা উৎসব’ পালন করা হচ্ছে।