বাবা রিকশাচালক জেনেই তালাক, বাধা পেরিয়ে মেডিকেলে ভর্তির অপেক্ষায় মেয়ে
সদ্য প্রকাশিত এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলে মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন শারমিন আক্তার সুমি। রংপুর মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি।
সুমি জয়পুরহাট সদর উপজেলার নিভৃতপল্লী কয়তাহারের গোলাম মোস্তফা ও তাহমিনা বেগম দম্পতির সন্তান। মা গৃহিণী, বাবা পেশায় রিকশাচালক। দুই মেয়ের মধ্যে সুমি ছোট। ভর্তি পরীক্ষায় ৭৭.০৫ স্কোর নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছে সুমি।
মেয়ে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন! এ খবর শোনার পরেই আঁতরে উঠেন সুমির বাবা রিকশাচালক বাবা গোলাম মোস্তফা। খবরটি শুনেই কেঁদে ফেলেন তিনি।
পরিবারে অভাব অনটনে এক সময় মেয়েকে বাল্যবিয়ে দিয়েছিলেন। তবে বাবা রিকশা চালান জেনে ভেঙ্গে যায় সংসার। তিন মাসও টেকেনি সেই সংসার। এতে কিছুটা বিচলিত হয়ে পরেন বাবা মোস্তফা। প্রতিজ্ঞা করেন মেয়ে সুমিকে হাজার কষ্ট হলেও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করবেন। সুমির বাবার সেই স্বপ্ন এখন বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে। তবে মেডিকেলে পড়াশোনার খরচ নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।
গোলাম মোস্তফা জানান, বড় স্বপ্ন নিয়ে বড় ঘরে সুমিকে বিয়ে দিয়ে ছিলেন। কিন্তু রিকশাচালকের মেয়ে বলে বিয়ের তিন মাস পর ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সুমিকে তালাক দেওয়া হয়। সেই দিন আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে কেঁদেছি। বিয়ের মেহেদি মুছতে না মুছতে তালাকপত্র পেয়ে কেঁদে ছিলেন মেয়েও। তখন থেকেই ভেঙে না পরে ঘুরে দাঁড়ানোর শপথ নেন সুমি।
তিনি আরও জানান, নিজের জমিজমা নেই। ওর পড়ালেখা ছাড়াও সংসারের খরচ জোগানোর জন্য সিলেট শহরে রিকশা চালাই।