দেড় শতাব্দীর ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের জবি হওয়ার ১৮

বুড়িগঙ্গার তীরে ১৬৫ বছর আগে ১৮৫৮ সালে ঢাকা ব্রাহ্ম স্কুল নামে যাত্রা শুরু পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটির। এক যুগের বেশি সময় পর ১৮৭২ সালে প্রতিষ্ঠানটির নাম বদলে করা হয় জগন্নাথ স্কুল। সময়ের প্রয়োজনে ১৩৯ বছর আগে ১৮৮৪ সালে জগন্নাথ কলেজ হিসেবে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। সেটিই ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) হিসেবে আবির্ভূত হয়, যার ১৮তম বার্ষিকী শুক্রবার।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ২০ অক্টোবরকে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে উদযাপন করে আসছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা, তবে শুক্রবার সরকারি ছুটি থাকায় এক দিন আগে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। সে উপলক্ষে লাল-নীল আলোকসজ্জা ও আল্পনায় সাজানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে।

প্রতিকূলতা কাটিয়ে উদ্যম ও সাহসের সঙ্গে জবি যৌবনে পদার্পণ করেছে বলে মনে করেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ কারণে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয় ‘আঠারোতে জগন্নাথ সাহসী নির্ভীক’।

দিবসটি উদযাপন করতে ক্যাম্পাসে আলোকসজ্জার পাশাপাশি আয়োজন করা হয়েছে নানা অনুষ্ঠানের। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীরা দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রঙের টি-শার্ট তৈরি করেছেন; বানিয়েছেন বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে অনুষ্ঠান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা অনুযায়ী নিরলসভাবে কাজ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আয়োজনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে চলে আল্পনা আঁকাসহ কাগজের রঙিন ফুল, ব্যানার ফেস্টুন তৈরির কাজ।

বর্ণিল আলোয় সজ্জিত বিশ্ববিদ্যালয়জুড়েই বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। বাহারি আয়োজন ও আল্পনা দেখতে ক্যাম্পাসে আসছেন শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ১৯তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সুরের তালে মাতবে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ব্যান্ড দল।

যেসব কর্মসূচি

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুষ্ঠানসূচি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনা করা হয়। তারপর ৯টা ৪০ মিনিটে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের উদ্বোধন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু মুরালে ৯টা ৫০ মিনিটে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে সকাল ১০টায় আনন্দ র‌্যালি জবি ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার দিয়ে ভিক্টোরিয়া অতিক্রম করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবে। আনন্দ র‌্যালি থেকে ফিরে ১০টা ৪৫ মিনিটে ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচতলায় প্রকাশনা উৎসবের উদ্বোধন করা হবে। এরপর বেলা ১১টায় নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের নিচতলায় বার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হবে।

ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মিলনয়াতনে বেলা সোয়া ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নাটক (নকশী কাঁথার মাঠ) পরিবেশনা করা হবে। পর্যায়ক্রমে মুজিব মঞ্চে দুপুর ১২টা থেকে বেলা পৌনে ছয়টা পর্যন্ত জবির সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং জবির সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদ ও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনা হবে। সবশেষে বিভিন্ন সংগঠনের (ব্যান্ডদল) অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আয়োজনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে।