১১ শিক্ষার্থী বহিষ্কারের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন আমেরিকান অধ্যাপক

জবি প্রতিনিধি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কারাগারে আটক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার ঘটনার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের প্রখ্যাত অধ্যাপক
ও আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের সভাপতি ড. আলী রীয়াজ।

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) প্রকাশিত এক নিবন্ধ কোন আইনে এই শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় বহিষ্কার করেছে তা জানতে চেয়েছেন।

এই অধ্যাপক বলেন, সাময়িকভাবে বহিস্কৃত এই ১১ শিক্ষার্থী কারাগারে আছেন কেন? তাঁদের বিরুদ্ধে ‘সরকারবিরোধী অপতৎপরতা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো’র অভিযোগ এনেছে পুলিশ। কোনো আদালত তাঁদের ইতিমধ্যে আইনি প্রক্রিয়ায় দোষী সাব্যস্ত করেননি, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে একধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কড়া সমালোচনা করে এ শিক্ষক বলছেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য আরও বেশি উদ্বেগজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেছেন, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নানা অপতৎপরতার অভিযোগ পাওয়া গেছে, যা সরকারবিরোধী। এমন অপতৎপরতায় যদি তাঁরা যুক্ত থাকেন, তবে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। সরকারবিরোধিতা কি তাহলে বাংলাদেশে অপরাধ বলে বিবেচিত হচ্ছে? বাংলাদেশের আইনে কোথাও সরকারবিরোধী তৎপরতাকে অপরাধ হিসেবে বর্ণনা করা হয়নি। যে দেশ নিজেকে গণতান্ত্রিক বলে দাবি করবে, সে দেশে সরকারবিরোধিতাকে অপরাধ বলে বিবেচনার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিককে সেই অধিকার দিয়েছে।

আলী রীয়াজ আরও বলেন, একদিকে শিক্ষামন্ত্রী বলছেন শিক্ষার্থীদের রাজনীতিসচেতন হতে হবে। রাজনীতিসচেতন না হয়ে সফল মানুষ হওয়া যায় না, সুনাগরিক হওয়া যায় না; অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, সরকারবিরোধী রাজনীতি অপরাধতুল্য, এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। এ কথার অর্থ দাঁড়ায়, একমাত্র সরকারের সমর্থক রাজনীতিই গ্রহণযোগ্য।

এর আগে গত ২৪ মার্চ রাজধানীর গেন্ডারিয়া এলাকার একটি ভাড়া মেস থেকে সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীসহ ১২ শিক্ষার্থীকে আটক করে কোতোয়ালি থানা এক পুলিশ টিম। এ শিক্ষার্থীদের ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বরে যাত্রাবাড়ী এলাকার এক ঘটনায় বিস্ফোরক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলেও কয়েকটি পরিবারের দাবি তখন তাদের সন্তানরা গ্রামের বাসায় ছিলেন। চলতি বছরের ৩ মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির উদ্দেশ্যে তারা প্রথম ঢাকায় আসেন। তাই গতবছরের এই ঘটনায় তারা জড়িত থাকার প্রশ্নই উঠেনা