গুগল সম্পর্কে অবাক করা কিছু তথ্য
গুগল আসার আগের জীবনের কথা কি আপনি মনে করতে পারেন? তখন আপনি কি করতেন, যখন হঠাৎ করে কোন বিষয়ে তথ্য খুঁজে বের করার দরকার হতো? গুগলে প্রতি সেকেন্ডে গড়ে ৬৩ হাজার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান করা হয়। যা প্রতিদিনের হিসেবে ৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন এবং বছরে ২ ট্রিলিয়ন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গুগলে খোঁজা হয়।
আপনি যখন গুগলে কোন বিষয় নিয়ে খোঁজাখুঁজি করেন, গুগল আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ এবং অভ্যাস সম্পর্কে খানিকটা জেনে ফেলে- কিন্তু আপনি গুগল সম্পর্কে কতটা জানেন? এখানে গুগল সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য রয়েছে, যা হয়তো আপনাকে অবাক করে দিতে পারে।
ভুল বানান থেকে গুগল নামের উৎপত্তি: গুগল নামের অর্থ কি, আপনি জানতে চাইতে পারেন। আসলে এর কোন মানেই নেই। গুগল নামটি আসলে এসেছে গাণিতিক হিসাবের গোগল (google) ভুল করে লেখার মাধ্যমে-যার মানে হলো ১ এর পিঠে ১০০টা শূন্য।
এ নিয়ে এখন অনেক গল্প প্রচলিত আছে যে, একজন প্রকৌশলী বা ছাত্র আসল নামের বদলে এই ভুল বানানটি লিখেছিলেন। সেই ভুল নামই পুরো দুনিয়ার সামনে চলে আসে। এর পরের ঘটনা তো ইতিহাস।
ব্যাকরাব থেকে গুগল: ল্যারি পেজ এবং সের্গেই ব্রিন যখন স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে একটি গবেষণা প্রকল্প শুরু করেন, কেউ ভাবেনি সেটা একদিন গুগলে পরিণত হবে।
গুগলের প্রতিষ্ঠাতারা প্রথম এই প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছিলেন ব্যাকরাব। যে পদ্ধতিতে একটি ওয়েবসাইট আরেকটি ওয়েবসাইটকে খুঁজে বের করে এবং সেগুলোর অতীত লিংকের ওপর নির্ভর করে ওয়েবপেইজে র্যাংকিং নির্ধারণ করে, তাকেই বলা হয় ব্যাকরাব।
গুগলের সবচেয়ে ভালো বন্ধু: গুগলে যারা কাজ করেন, এমনকি যারা নতুন কাজ করতে এসেছেন, তারা সবাই নিজের কুকুর সঙ্গে করে নিয়ে আসতে পারে। তবে এটা প্রমাণ করতে হবে যে, তারা অফিসের ধরণের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত, যেখানে সেখানে হাগুমুগু করে নোংরা করবে না।
কর্মচারীদের বিনামূল্যে খাবার: গুগল হচ্ছে প্রথম বড় প্রযুক্তি কোম্পানি যারা তাদের কর্মচারীদের বিনামূল্যে খাবার পরিবেশন করে। গুগল কার্যালয়ে সবসময়েই সবার খাবার জন্য কিছু না কিছু রয়েছে।
ফোবর্সের তথ্য অনুযায়ী, গুগলের পিতা সের্গেই ব্রিন প্রথম দিকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, গুগলের অফিস কখনোই খাবার প্রাপ্তির স্থান থেকে ৬০ মিটারের বেশি দূরত্বে হবে না।
বেচতে চেয়ে ক্রেতা পাননি গুগলের প্রতিষ্ঠাতারা: ১৯৯৯ সালে ল্যারি এবং সের্গেই গুগলকে ১ মিলিয়ন ডলারে বিক্রির চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু সেটা কেনার মতো কোন গ্রাহক ছিল না। এমনকি দাম কমিয়ে দেয়ার পরেও কোন গ্রাহক মেলেনি।
এখন গুগলের মোট সম্পদের পরিমাণ ৩০০ বিলিয়ন ডলার। হয়তো কেউ কেউ সেই সুযোগ হাতছাড়া করার জন্য এখন আফসোস করতে পারে।
গুগলের ছাগল: গুগল সবসময়েই বলে, তারা সবুজ উদ্যোগ সমর্থন করে। এরই একটি হলো ছাগলের মাধ্যমে লনের ঘাসকাটা।
ক্যালিফোর্নিয়ায় গুগলের সদর দপ্তরটি বিশাল এবং এর ভেতরে অনেক সবুজ জায়গা আছে। এখানে ঘাস কাটার জন্য লন-মোয়ার মেশিন ব্যবহার করা হয় না। এ জন্য গুগল বাইরে থেকে ছাগল ভাড়া করে নিয়ে আসে। আপনি যদি কখনো সেখানে যান, দেখতে পাবেন প্রায় ২০০ ছাগল সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর ঘাস খেয়ে লনের ঘাস ঠিকঠাক রাখছে।
ডুডল: গুগল ডুডল হলো গুগল কর্তৃক ডিজাইনকৃত কোনো বিশেষ দিন, বিশেষ ঘটনা, অর্জন বা বিখ্যাত কোনো ব্যক্তির জন্ম – মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণ করতে গুগলের প্রধান পাতায় তাদের লোগোর পরিবর্তে ব্যবহৃত শিল্পসম্মত লোগো। যেটি কোনো বিশেষ দিনে গুগলের প্রধান পাতায় তাদের নিজস্ব লোগোর পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়।
অফিসের বাইরে বার্তা যোগাযোগের মাধ্যমে প্রথম গুগল ডুডল চালু হয় ১৯৯৮ সালের ৩০ অগাস্ট। যখন ল্যারি আর সের্গেই একটি উৎসবে নেভাদা গিয়েছিলেন, তখনি প্রথম এই আইডিয়াটি আসে। গুগলেল প্রতিষ্ঠাতারা ভেবেছিলেন এর মাধ্যমে তারা জানিয়ে দেবেন যে কেন তারা অফিসে অনুপস্থিত। এরপর থেকেই ডুডল গুগলের একটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়। সূত্র: বিবিসি