রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন, তবুও প্রেম-প্রণয় তাদের

বিয়ে করেছেন ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত। কনে সামিয়া ইফফাত ঢাকা সিটি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সাবেক ছাত্রী। গত শুক্রবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের মাধ্যমে যুগলবন্দি হন এই দম্পতি।

বর হাসিবুল হোসেন শান্ত ছাত্রলীগের (সাদ্দাম-ইনান কমিটির) কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। আর কনের বাবা পটুয়াখালী জেলার মহীপুর থানা বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনৈতিক মেরুকরণের যুগে ক্ষমতার মতাদর্শগত বৈপরীত্য বাধা হতে পারেনি এ যুগলের প্রণয়ে।

মাঠের রাজনীতিতে ভিন্ন অবস্থানের প্রভাবে সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়া কিংবা স্থগিত থাকার ঘটনা পূর্বে ঘটলেও এবারের ঘটনাটি নিয়ে ইতিবাচক-নেতিবাচক নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে সংশ্লিষ্ট মহলে। বিয়ের আগে এ যুগলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল দীর্ঘ ৮ বছর ১১ মাস ১৯ দিনের। ছাত্রলীগের পদে থাকা অবস্থায় এ প্রণয় নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে তার অনুসারীদের মধ্যে।

তবে বিষয়টি রাজনীতির বাইরে রেখে একান্ত ব্যক্তিগত করে রাখতে চান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত। এ নিয়ে আপাতত কোনো মন্তব্য করতে চান না এ ছাত্রনেতা। এছাড়াও এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি নন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় অন্য নেতারাও।

ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল হোসেন শান্ত দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।

তবে এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। নাম, পরিচয় অপ্রকাশিত রেখে তারা বলছেন, ছাত্রলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বে থাকা অবস্থায় তিনি হঠাৎ বিবাহ করেছেন, এ নিয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। হাসিবুল হোসেন শান্ত পদ থেকে সরে গিয়ে সবাইকে জানিয়ে বিবাহ করলে এতো আলোচনা-সমালোচনা হতো না।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তাদের বিয়ে নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এতে নেটিজেনরা বলছে, বিয়ের মতো পবিত্র সম্পর্ককে রাজনীতি থেকে দূরে রাখা উচিত। শান্ত ও সামিয়ার ৮ বছর রিলেশন ছিল, তাহলে এখন কি রাজনীতির দোহাই দিয়ে বিরোধী দলের মেয়েকে বিয়ে না করাই উত্তম ছিল? আবার বিয়ে না করলে আবার আপনারাই সমালোচনা করে বলতেন, ছাত্রলীগের শান্ত প্রেম করে বিয়ে করেনি।

ছাত্রলীগের পদে থেকে বিয়ে করা যায়?
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, এর আগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতা সনজিৎ চন্দ্র দাস, লেখক ভট্টাচার্য, আল নাহিয়ান খান জয়সহ অনেকেই তাদের বিবাহের পূর্বে পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। হাসিবুল হোসেন শান্তও এটি করতে পারতেন। তার এ দৃষ্টান্ত ছাত্রলীগের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করছে।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে দপ্তরের সঙ্গে কথা বলুন।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিবাহিত হলে পদ দেওয়া যাবে না সেটা ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু পদ পাওয়ার পর বিয়ে করলে সেক্ষেত্রে গঠনতন্ত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা নেই।

“তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মাসের শেষে বর্ধিত সভায় এ বিষয়টি প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি মনে করলে তখন সেটা উত্থাপিত হবে। এতে চাইলে তাকে অব্যাহতি দিতে পারে; আবার নাও দিতে পারে।”