ড. হাসান মোহাম্মদ যুক্তিবাদী মানুষ ছিলেন: প্রফেসর সিকান্দার খান
চবি প্রতিনিধি
হাসান মোহাম্মদ ছিলেন একজন যুক্তবাদী মানুষ। তিনি কখনো কথা এড়িয়ে যেতেন না৷ ভিন্নমত হলেও সুন্দর করে উত্তর দিতেন৷ ভিন্নমতের রাজনৈতিক মানুষদেরও তিনি ভালোবাসতেন। উনার জীবন ছিলো পূর্ণ কর্মময়।
এক হাসান চলে গেছে, কিন্তু অনেক হাসান আছে এখনো। আমরা তাঁর জন্য কাঁদি কারণ এরকম হাসান আমরা আর পাবো না। এরকম বিদ্বান, নিরংকার, জ্ঞানী হাসান জাতি আর পাবে না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মরহুম প্রফেসর ড. হাসান মোহাম্মদ এর নাগরিক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সুকান্দার খান এসব কথা বলেন৷
শনিবার (১২ মার্চ) বিকাল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে এ নাগরিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। চবি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম, সভাপতিত্ব করেন চবি দর্শন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক প্রফেসর ড. এম শফিকুল আলম। এসময় বক্তব্য রাখেন চবির বিভিন্ন বিভাগের সাবেক-বর্তমান শিক্ষকবৃন্দ।
বক্তব্যে চবি বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর ড. আতিকুর রহমান বলেন, তিনি কখনো নিজের মতকে অন্যের উপর চাপিয়ে দিতেন না৷ আমরা একসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পর্ষদে কাজ করেছি। উনি উনার জ্ঞান, মেধা দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে সমৃদ্ধ করেছেন।
চবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) ভিপি নাজিম উদ্দিন নাজিম বলেন, ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধেও স্যার ভূমিকা রেখেছেন৷ হাসান মোহাম্মদ স্যারের মাগফিরাত কামনা করছি৷
আরো বক্তব্য রাখেন, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর কে এম গোলাম মহিউদ্দিন, প্রফেসর ড. আ ক ম আবদুল কাদের, প্রফেসর শামীম আহমেদ, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি শহীদুল হক ও সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সজীব কুমার ঘোষ বলেন, হাসান স্যারের প্রতি ভালোবাসার টানে আজকে এখানে আসা৷ চবিতে শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হওয়ার পর স্যারের পরিচয়৷ উনার রাজনৈতিক পরিচয় ওতটা দেখি না। স্যারকে আমি জানি একজন ভালো গবেষক হিসেবে। স্যার আমাদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।
ড. হাসান মোহাম্মদ একাধারে বিশিষ্ট লেখক, সংগঠক, সম্পাদক, বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ ও বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তিনি চবির একাধারে সিন্ডিকেট সদস্য, এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট, শিক্ষক সমিতির সভাপতি, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ও রেজিস্ট্রার সিলেকশন কমিটির সদস্যসহ অনেক পর্ষদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
হাসান মোহাম্মদ এর প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে আছে, কমরেড মুজফফর আহমদ ও ও বাংলার কমিউনিস্ট আন্দেলন (১৯৮৯), এছাড়া ৮টি বই লিখেন তিনি। এছাড়াও অনেক বই সম্পাদনা, সহ-সম্পাদনা ও সম্পাদক কমিটির সদস্য ছিলেন৷
এছাড়া স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন, বক্তারা হলেন, রূপালী ক্রেডিট কো অপারেটিভ লি. এর চেয়ারম্যান মো. আবুল কাসেম, সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ বারী, সাধারণ সম্পাদক মনজুর আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, হাসান মোহাম্মদের সন্তান প্রফেসর ড. ফুয়াদ হাসান, ড. মোসলেম উদ্দিন মুন্না, পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী আধ্যাপক মো. আব্দুর রহিম, রাজনীতিবীদ এডভোকেট এম এ তাহের ও প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন, সীতাকুণ্ড তাহের মনজুর কলেজের অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান, ফেনী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মনিরুজ্জামান সোহান, ফ্রেন্ডস ক্লাবের সেক্রেটারি জাকির হোসেন, ডেইলী লাইফ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন, হাজি কল্যাণ পরিষদের সেক্রেটারি মো. শরীফ, লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং সন্দ্বীপ এর প্রেসিডেন্ট কাজী জিয়া উদ্দিন সোহেল, সজাগ সন্দ্বীপ সম্পাদক প্রভাষক ফসিউল আলম প্রমুখ।