আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতা দেখিয়ে দেশের নান উজ্জ্বল করেছে তরুণ প্রজন্মঃ রাবিপ্রবি উপাচার্য

ক্যাম্পাসনিউজ ডেস্কঃ

দেশের তরুণ প্রজন্ম আজ আধুনিক প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জন করে দেশের উজ্জ্বল করেছে বলে মনে করেন রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বকে জানান দিয়ে ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা দিয়েছেন৷ বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করে ডিজিটাল বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তিতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেন। আইটি শিল্পের রপ্তানি আয় ১০কোটি মার্কিন ডলার। প্রযুক্তি খাতে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ, যা শতকরা হারে বিশ্বের ২৭ শতাংশ।

শুক্রবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘অদম্য বাংলাদেশ-অর্জন, সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার। সেমিনারের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ‘এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি)’। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় হবে না বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় ঋণের হার ১০৯ শতাংশের বেশি। আর বাংলাদেশের জিডিপির তুলনায় ঋণের হার মাত্র ৩৮ শতাংশ। অর্থাৎ বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ তুলনামূলক কম। আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাংকের মতে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ জিডিপির তুলনায় নিরাপদ ও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও ইআরডিএফবি সভাপতি অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ- উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খাঁন বক্তব্য দেন।

দেশকে শ্রীলঙ্কার সাথে তুলনাকারীদের সমালোচনা করে বিশিষ্ট অধ্যাপক আতিউর রহমান বলেন, জ্যোতিষীদের মতো বাংলাদেশ শ্রীলংকা হয়ে যাবে এমন মন্তব্য না করে, তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরুন।

তিনি সরকারকে অবকাঠামো উন্নয়নের ধারাবহিকতা বজায় রাখা, আমদানি-রফতানি ব্যয়ের ব্যবধান কমানো এবং বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর বলেন, বিশ্বব্যাপী ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতায় উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে নতুন করে আঞ্চলিকতাবাদ ও অর্থনৈতিক সংরক্ষণবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে। নয়া এ মেরুকরণের সুফল পেতে পারে বাংলাদেশ।

ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, সরকারের অর্জন টেকসই করতে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণা ও উদ্ভাবনে আরও গুরুত্ব দিতে হবে এবং সময়বদ্ধ ও বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। এছাড়া তিনি চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগানো এবং শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থার সাথে উপযোগী করে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন।

ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শিক্ষক সমাজকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিস্তৃতি, রাষ্ট্রের কল্যাণে সরকারের গৃহীত কর্মসূচি ইতিবাচকভাবে তুলে ধরা এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য সচেতনতা তৈরিতে সকলকে কাজ করতে হবে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও ইআরডিএফবি’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. বদরুজ্জামানের সঞ্চালনায় সেমিনারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।